Wednesday, July 3, 2013

মহিলাদের মহিলা ইমাম-এর পেছনে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য



সূচনা :

মহিলাদের জামায়াতে একজন মহিলা ইমাম হয়ে নামাজ পড়াবেন । এটাই ইসলামের বিধান। এই বিষয়ে অনেকেই তেমন কিছু জানেন না । আজ এই পোস্টে এসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবো । এই পোস্টে মহিলা বলতে সব বয়সের মেয়ে বা Female-কে বুঝানো হচ্ছে ।মুক্তাদী বলতে ইমামের পেছনে নামাজ পড়া লোককে বোঝানো হয়েছে ।

মহিলাদের মহিলা ইমাম-এর পেছনে নামাজ পড়ার বিষয়ে মাযহাবের ইমামদের মত :
হানাফি মাযহাবের মত :যদি কোন মহিলা শুধুমাত্র মহিলাদের জামায়াতে কোন নামাজের ইমামতি করে তাহলে সে নামাজ সঠিক হবে । হিদায়া খন্ড : ১ পৃষ্ঠা : ৩০৫ ।বাদাউস সানাই খন্ড ১ পৃষ্ঠা : ১৫৭ ।
শাফেয়ী মাযহাবের মত :একজন মহিলা শুধুমাত্র মহিলাদের জামায়াতের ইমাম হতে পারবেন । তাদের এভাবে নামাজ পড়া মুস্তাহাব । আল মুগনি খন্ড : ১২ পৃষ্ঠা : ১৯৯ । বাদাই খন্ড : ১, পৃষ্ঠা : ১৫৭ ।
হান্বালী মাযহাবের মত : মেয়েদের মহিলা ইমামের পেছনে নামাজ পড়া গ্রহণযোগ্য । আল মুগনি খন্ড : ১২ পৃষ্ঠা : ১৯৯ ।
http://www.ummah.com/forum/showthread.php?287641-Can-a-woman-become-a-Imam

শাফেয়ী ও হান্বলী মাযহাবের গবেষকগণ আবু দাউদ শরিফের মহিলা সাহাবী উম্মু ওয়ারাকাহ (রা.) উপর ভিত্তি করে তাদের মত প্রদর্শন করেছেন ।
তবে উম্মু সালমাহ রা. ও আয়িশা রা. নিয়মিত মহিলাদের নামাজে ইমামতি করতেন । ( মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৮৮-৮৯ )

মহিলাদের মহিলা ইমাম-এর পেছনে নামাজ পড়ার বিষয়ে হাদিসসমূহ :
আগেই আমরা তিন হাদিস দেখলাম (দুইটা স্ক্রীণ সট দেওয়া হয়েছ)।আরো বিস্তারিত জানার জন্য এবার আমরা মহিলাদের মহিলা ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার কিছু হাদিস সম্পর্কে জানবো ।

১.

عَنْ أُمِّ وَرَقَةَ بِنْتِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ الْأَنْصَارِيِّ وَكَانَتْ قَدْ جَمَعَتِ الْقُرْآنَ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ أَمَرَهَا أَنْ تَؤُمَّ أَهْلَ دَارِهَا وَكَانَ لَهَا مُؤَذِّنٌ وَكَانَتْ تَؤُمُّ أَهْلَ دَارِهَا ( حم : مسند القبائل : باب ما جاء في إمامة المرأة ، د : كتاب الصلاة 500)

উম্মে ওয়ারাক্বাহ বিনতে আব্দুল্লাহ ইবনিল হারিছ আল-আনসারী, যিনি ক্বুরআন শরীফ জমা করেছিলেন/কুরআন শরীফ পড়েছিলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরবাসীদের নামাজের ইমামতি করার জন্য উম্মে ওয়ারাক্বাহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তিনি ঘরবাসীদের নামাজের ইমামতি করতেন৷
( দেখুন : ১.মুসনাদুল ক্বাবাইল, বাবু মা জা- ফী ইমামাতিল মারআহ, ২.সুনান আবূ-দাঊদ ,কিতাবুস সালাহঃবাবুন ফী জিকরিল জামাআতি ওয়া আহলিহা ওয়া সিফাতিল ইমাম৷ ৩.মুসনাদ ইমাম আহমদ)

২.এবার দারুক্বুত্বনীতে বর্ণিত একই হাদীস তার অনুবাদ দেখিঃ

عن أم ورقة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم أذن لها أن يؤذن لها ويقام وتؤم نساءها ( دار قطني : كتاب الصلاة : باب في ذكر الجماعة وأهلها وصفة الإمام)

"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মর্মে উম্মে ওয়ারাক্বাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে অনুমতি দিয়েছিলেন যে, আজান ইক্বামত দেয়া হবে এবং তিনি (উম্মে ওয়ারাক্বাহ) মহিলাদের নামাজের ইমামতি করবেন (ওয়া তাউম্মা নিসা-আহা)"

৩. আয়িশা (রা.) বর্ণিত, আয়েশা রা. এবং উম্মে সালামাহ মেয়েদের নামাজের জামায়াতে ইমামতি করেছেন এবং এমনকি মেয়েদের ফরজ নামাজে তিনি ইমামতি করেছেন। 
উৎস: বাইহাকি ৩/১৩১, দারে কুতনী ১/৪০৪, আব্দুর রাজিক ৫০৮৬ ।

৪. ইবনে আবু লায়লা হতে আতা (রা.) বর্ণনা করেন, আয়েশা রা. আযান ও ইকামাত দিতেন এবং মেয়দের নামাজের জামায়াতে ইমামতি করতেন এবং তিনি তাদের মধ্যে একই সারিতে দাড়াতেন ।
উৎস: ইবনে আবু শায়বাহ ২/৮৯

৫. লাইস ইবনে আবু সুলাইম হতে আতা (রা.) বর্ণনা করেন, আয়েশা (রা.) আযান ও ইকামাত দিতেন এবং মেয়েদের নামাজের জামায়াতে ইমামতি করতেন এবং তিনি তাদের মধ্যে একই সারিতে দাড়াতেন ।
উৎস: মুসতাদরাকে হাকিম

৬. আম্মার আদ্দাহ্নি বর্ণিত, হুজাইরাহ্ নামক তার গোত্রীয় মহিলা বলেন, উম্মে সালামাহ (রা.) মহিলাদের নামাজে ইমামতি করার সময় একই সারিতে দাড়াতেন ।

আশ্শাফি : ৩১৫, ইবন আবি শাইবাহ : ৮৮/২, আব্দুর রাজিক : ৫০৮২

৭.আব্দুর রাজিক একই হাদিসে বলেন, উম্মে সালামাহ মহিলাদের আসর নামাজ পড়ালেন একই সারিতে দাড়িয়ে ।

৮.মুহাম্মদ ইবন আল-হুসাইন ইব্রাহিম আন্নাখি হতে বর্ণনা করেন : আয়িশা রা. রমজান মাসে মহিলাদের নামাজে একই সারিতে দাড়িয়ে ইমামতি করতেন । আদ্দিরাইয়াহ ১/১৬৯
৯. ইবনে আব্বাস বলেন, এক জন মহিরা মহিলাদের জামায়াতে তাদের মাঝে দাড়িয়ে ইমামতি করতে পারে । আব্দুর রাজিক ৫০৮৩

এসব হাদিস হতে প্রমাণ হলো :
১.মহিলাদের জামায়াতে একজন মহিলা ইমাম হয়ে নামাজ পড়াবেন ।
২.যখন একজন মহিলা নামাজে অন্য মহিলাদের করবেন তখন তিনি সারির মধ্যেখানে দাঁড়াবেন

৩.মহিলাদের মহিলা ইমাম-এর পেছনে নামাজ পড়ার সুন্নত ।

সুতরাং এভাবে নামাজ পড়ার মধ্য বরকত রয়েছে । মেয়েদের নামাযে মেয়েদের ইমামতি কিছুতেই বিদআত হতে পারে না ।



মহিলাদের মসজিদে যেয়ে জামাআতে নামাজ পড়ার হাদিস:

জামায়াতে নামাজ পড়ালে সোয়াব বেশী হয় । উপরন্তু ইসলাম জামায়াতবদ্ধ জীবন যাপনকে উৎসাহিত করে । এজন্য রাসুল (সা.)-এর যুগে মেয়েরা জামায়াতে নামাজ পড়ার জন্য নিয়মিত সব নামাজে নামাজ পড়াসহ অন্যান্য সামাজিক কাজে অংশ নেওয়ার জন্য মসজিদে যেতো । এজন্য মেয়েদের জামাআতে নামাজ পড়ার বিষয়ে অনেক হাদিস রয়েছে ।
এসব হাদিস হতে কয়েকটা হাদিস আমরা এক নজর দেখবো :  
 



১. আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন: তোমাদের মহিলাদেরকে মসজিদে আসতে বাধা দিও না। ( সহিহ মুসলিম, খন্ড ১, অধ্যায় ১৭৭, হাদিস নং : ৮৮৬ )

২. রাসুল (সা.) স্বামীদের উদ্দেশ্য করে বিশেষভাবে বলেছেন : যদি তোমাদের মধ্যকার কারো স্ত্রী মসজিদের আসার অনুমতি চায়, তাহলে তাকে মসজিদে আসতে নিষেদ করবে না ।( সহিহ বুখারী, খন্ড ১, অধ্যায় নামাজ, অনুচ্ছেদ ৮০, হাদিস নং : ৮৩২ )
৩.আবু হুরাইরা( রা.) বলেন, নবী (সা.)বলেছেন: তোমরা আল্লাহর দাসীদেরকে আল্লাহর মসজিদসমূহে আসতে নিষেদ করো না। তবে তারা যেনো সুগন্ধি ব্যবহার না করে বের হয়।
(সুনানে আবু দাউদ, খন্ড ১, অনুচ্ছেদ ৫৮, হাদিস নং : ৫৬৫ )

রাসুল (সা.)-এর যুগে মসজিদগুলোতে মহিলাদের প্রবেশাধিকার অবাদ ছিল । তাদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও বের হওয়ার রাস্তা ছিল । মেয়েরা শেষের দিকের সারিগুলোতে নামাজ পড়তেন । মসজিদ ইবাদতের স্হান । এখানে কেহ অসৎ উদ্দেশ্যে আসে না । যদি বাংলাদেশের মহিলারা বাড়ীতে না থেকে মসজিদে এসে নামাজ পড়ে ও ইসলামী আলোচনা শোনে, তাহলে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের অবস্হা ইতিবাচক অবস্হার দিকে যাবে । এভাবে আমাদের দেশটা ইসলামী রাষ্ট্রে পরিনত হবে । এজন্য আমাদের মহিলাদের ইসলামী আলোচনা শোনা ও ইসলাম সম্বন্ধে জানার সুযোগ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সকল মসজিদে মহিলাদের জন্য পৃথক স্থান নির্ধারণ করার জন্য জনমত গঠণ করতে হবে । তথ্যবিত্তিক যুক্তিনির্ভরভাবে কুরআন ও হাদীসের আলোকে ইসলামের সঠিক সৌন্দর্য তুলে ধরে আলোচনাকরার জন্য আমাদের আলেম সমাজকে সচেষ্ট হতে হবে ।


জামাআত কায়েম করতে হয় মসজিদে। যেখানে মসজিদ নেই,তখন ঘরে,অফিসে, মাঠ,রাস্তা -ঘাঠে,যানবাহনে অর্থাৎ যেকোনো স্থানেই নামাজের জামাআত কায়েম করা যায়।

যে কোন ছেলে ইমাম হয়ে স্ত্রী/কণ্যা/মা/বোনদের নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মসজিদগুলোতে মেয়েদের প্রবেশাধীকার দেওয়া হচ্ছে না । এই বিষয়টি মানবতাবিরোধী ও ইসলামবিরোধী । এই বিষয়ের উপর অদুর ভবিষ্যতে “মহিলাদের মসজিদে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য” শিরোনামে একটা লেখা উপস্হাপন করবো । আশা করি আমার সাথেই থাকবেন ।

মহিলাদের জন্য নামাজে ইমামতির সময় মহিলা ইমাম কোথায় দাঁড়াবেন? :
কোন মহিলা যখন কিছু মহিলাদের জামায়াতে নামাজ পড়াবেন, তখন তিনি প্রথম সারির মধ্যখানে দাঁড়াবেন বা মহিলাদের সারির মাঝখানে দাঁড়াবেন । যেমন: প্রথম সারিতে ১১ জন মেয়ে থাকলে তিনি ৬ নং স্হানে দাড়াবেন ।



নামাজের সময় মেয়েদের কোন ধরনের পোষাক পড়তে হবে:
১. মুখ মন্ডল, হাতের তালু ও পায়ের পাতা ছাড়া সমগ্র শরীর ঢেকে রাখার উপযোগী পোষাক পড়তে হবে । অন্যথায় নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে ।
২. মাথার চুল ও বুক ভালভাবে আবৃত হওয়ার মতো করে ওড়না ব্যবহার করতে হবে । অন্যথায় নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে ।
৩.নামাজের সময় পায়ের গোড়ালী ঢেকে রাখতে হবে । অন্যথায় নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে ।
৪. যে পোষাক পড়লে শরীরের মাংসপেশীর ভাজ বোঝা যায় সে পোষাক পড়ে মেয়েদের নামাজ পড়া যাবে না । অন্যথায় নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে ।

সতর্কতা: যে পোশাক পড়লে মেয়েদের শরীরের মাংসপেশীর ভাজ বোঝা যায়, সেধরনের যে কোন পোশাক পড়া মেয়েদের জন্য হারাম এবং যে মেয়ে এধরনের পোষাক পড়বে তার কবিরা গুনাহ হবে । উল্লেখ্য এই কারণে মেয়েদের প্র্রচলিত স্কুল ও কলেজের ড্রেস পড়া কবিরা গুণাহের কাজ । যে বা যারা এসব পোষাক প্রবর্তন করেছে, বানিয়েছে, কিনে দিয়েছে, পড়েছে বা পড়তে বাধ্য করেছে – তারা সবাই জাহান্নামে যাওয়ার মতো কাজ করে যাচ্ছে । কারণ রাসুল (সা.) তাদের দাউয়ুস বলে অভিহিত করেছেন এবং তিনি বলেছেন. দাইয়ুস জান্নাতে যাবে না । আর এসব পোষাক পরিধানকারী মেয়েদের রাসুল (সা.) মুতাবার্রিবা বলে আক্ষায়িত করেছেন । তারাও জান্নাতে যেতে পারবে না । তবে যদি তারা এসব পোষাক পড়া ত্যাগ করে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী পোষাক পড়তে অভ্যস্হ হয় এবং এসব পোষাক সমাজ হতে উৎখাত করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে তাহলে তারা হযরত সুমাইয়া (রা.),ফাতিমা (রা.) ও আয়িশা (রা.) সাথে জান্নাতে অবস্হান করবেন । সুতরাং আমাদের প্র্রচলিত স্কুল ও কলেজের ড্রেস কোড পরিবর্তনের জন্য দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলতে হবে । কারণ জান্নাতই আমাদের শেষ ঠিকানা এবং আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-ই সব আর বাকি সব মিথ্যা । সুতরাং মেয়েদের স্কুল ও কলেজের ড্রেসের পোষাক হতে হবে এমন যাতে মেয়েদের মুখ মন্ডল ও হাতের তালু ছাড়া সমগ্র শরীর ঢেকে থাকে এবং মেয়েদের শরীরের মাংসপেশীর ভাজ বোঝা অপ্রকাশিত থাকে ।



মহিলা ইমামের নামাজের সময় করণীয়:

১.নিচু স্বরে ইক্বামত দিবে।
২.মহিলা ইমাম ঘরে নামাজ পড়ালে স্বরবে কিরাআত পড়বে যাতে মহিলারা শুনতে পারে।
৩.মহিলা ইমাম ঘরের বাহিরে পার্কে বা রাস্তায় নামাজ পড়ালে মৃদু শব্দে কিরাআত পড়বে ।

নামাজের জামায়াতে সারিবদ্ধতার নিয়ম :
১.দুই জন লোক হলে জামাআতে নামাজ পড়া যাবে । তখন ইমাম বামে ও মুক্তাদী ডাইনে দাঁড়াবে।
২.তিনজন পুরুষ হলে ইমাম সম্মুখে এবং দুজন পুরুষ পিছনে দাড়াবে । বিশেষ কারণে ইমামের দু’পাশে দু’জন সমান্তরালভাবে দাঁড়াতে পারেন। তার বেশী লোক হলে অবশ্যই পিছনে সারি করতে দাড়াতে হবে ।




৩.যদি কিছু সংখ্যক পুরুষ ও কিছু সংখ্যক মহিলা জামায়াতে নামাজ পড়তে আসে, তাহলে সামনের সারিগুলো পুরুষগণ ও পিছনের সারিগুলোতে মহিলাগণ দাঁড়াবেন।






৪. যদি কিছু সংখ্যক পুরুষ ও কিছু সংখ্যক মহিলা জামায়াতে নামাজ পড়তে আসে, তাহলে
পুরুষ সকলের ইমাম হবেন। কিন্তু নারী কখনো পুরুষের ইমাম হবেন না। নারী ও পুরুষ কখনোই পাশাপাশি দাঁড়াবেন না।
৫. দুইজন বয়স্ক পুরুষ, একটি বালক ও একজন মহিলা মুছল্লী হলে বয়স্ক একজন পুরুষ ইমাম হবেন। তাঁর পিছনে উক্ত পুরুষ ও বালকটি এবং সকলের পিছনে মহিলা একাকী দাঁড়াবেন।
 
৬. যদি দুজন পুরুষ ও একজন মহিলা হন, তাহলে ইমামের ডাইনে পুরুষ মুক্তাদী দাঁড়াবেন এবং পিছনে মহিলা একাকী দাঁড়াবেন।
৭.একজন পুরুষ ও একজন মহিলা হলে সামনে পুরুষ ও পিছনে মাহিলা দাঁড়াবেন। এই ক্ষেত্রে ইমাম মেয়ের বাবা অথবা ভাই অথবা স্বামী অথবা ছেলে হতে হবে ।অন্যথায় এধরনের নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে ।
৮.ইমামকে মধ্যবর্তী ধরে কাতার ডাইনে ও বামে সমান করতে হবে। তবে ডাইনে সামান্য বৃদ্ধি হতে পারে ।
৯.প্রয়োজনে ইমাম উঁচুতে ও মুক্তাদীগণ নীচে দাঁড়াতে পারেন।
১০.ইমামের আওয়ায পৌঁছলে ইমাম নীচে থাকুন বা উপরে থাকুন ছালাত আদায় করা জায়েয।
১১.এক ব্যক্তি দ্বিতীয়বার জামা‘আতে ইমাম বা মুক্তাদী হিসাবে যোগদান করতে পারেন। তখন দ্বিতীয়টি তার জন্য নফল হবে।
১২.ইমাম অতি দীর্ঘ করলে কিংবা অন্য কোন বাধ্যগত কারণে মুক্তাদী সালাম ফিরিয়ে জামা‘আত ত্যাগ করে একাকী শুরু থেকে ছালাত আদায় করতে পারবেন।
কাতার সোজা করা
১.সম্মুখের কাতারগুলি আগে পূর্ণ করতে হবে।
২.কাতার সোজা করতে হবে এবং কাঁধে কাঁধ পায়ে পা মিলাতে হবে। 


উপসংহার :
আজকরের এই নিবন্ধ হতে প্রমাণিত হলো :

মহিলাদের জামাতে নামায পড়া জায়েয । যদি
১.ইমামটা মহিলা হয়
অথবা
২.কিছু পুরুষ যদি কোন পুরুষ ইমামের পেছনে নামাজ পড়ে, তবে সেই জামায়াতে মেয়েরা সেই পুরুষ ইমামের পেছনে পুরুষদের পেছনে সারি বেধে নামাজ পড়বে । জামাতে নামাজ পরলে মেয়েরা পুরুষের পিছনে দাঁড়াবে একজন মহিলা হলেও
অথবা
৩.যদি কোন মেয়ের বা মেয়েদের পরিবারের আপন ভাই অথবা স্বামী অথবা ছেলে অথবা বাবা থাকে তাকে ইমাম বানিয়ে মেয়ে বা মেয়েরা নামাজ পড়তে পারে ।

ইসলাম জামায়াতবদ্ধ জীবন যাপন করাকে গুরুত্ব দেয় । কারণ জামায়াতে নামাজ পড়লে
সোয়াব বেশী এবং জামায়াতবদ্ধ লোকদের মধ্যে ইসলামী চেতনা জোড়ালো হয় ও পরস্পর সৌহার্দ-সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায় ।

নারী-পুরুষ-ছোট-বড় নির্বিশেষে সব মুসলিমকে মসজিদে যেয়ে নামাজ পড়াসহ সব ধরণের সামাজিক-রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ করাই ইসলামের বিধান বলে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে । সুতরাং বাংলাদেশের প্রতিটি মসজিদে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্হা করার জন্য আমাদের সর্বাত্ম চেষ্টা করতে হবে । উপরন্তু যেসব মহিলা বা ছাত্রী স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বা মহিলা নিবাসে অবস্হান করছেন তাদের প্রতিটা ফরজ ও ওয়াজিব নামাজ মহিলা ইমামের পেছনে নিয়মিত পড়ার জন্য সচেতন হতে হবে । অন্যথায় ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ বিধান অবজ্ঞা করার জন্য হাসরের ময়দানে আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে ।

No comments:

Post a Comment